৩২ হাজার প্রাইমারি শিক্ষকের নিয়োগ বহাল, সিঙ্গল বেঞ্চের রায় খারিজ করল কলকাতা হাইকোর্ট

২০১৪ টেটের ভিত্তিতে নিয়োগপ্রাপ্ত ৩২ হাজার প্রাইমারি শিক্ষকের চাকরি রক্ষা—সিঙ্গল বেঞ্চের রায় বাতিল করল কলকাতা হাইকোর্টের ডিভিশন বেঞ্চ।

৩২ হাজার প্রাইমারি শিক্ষকের নিয়োগ বহাল, সিঙ্গল বেঞ্চের রায় খারিজ করল কলকাতা হাইকোর্ট

কলকাতা : কলকাতা হাইকোর্ট বুধবার ঐতিহাসিক রায় দিয়ে সিঙ্গল বেঞ্চের সেই আদেশ বাতিল করল, যেখানে ২০১৪ সালের টিচার্স এলিজিবিলিটি টেস্ট (টেট)–এর ভিত্তিতে নিয়োগপ্রাপ্ত প্রায় ৩২ হাজার প্রাইমারি শিক্ষকের চাকরি একযোগে খারিজ করা হয়েছিল। ক্যাশ-ফর-জবস দুর্নীতির অভিযোগ ঘিরে উত্তপ্ত রাজ্যের শিক্ষাক্ষেত্রে এই রায় নতুন মোড় আনল। বিচারপতি তপব্রত চক্রবর্তী–র নেতৃত্বাধীন ডিভিশন বেঞ্চ জানায়, সব নিয়োগ যে অনিয়মিত ছিল—এমন কোনও প্রমাণ আদালতে উপস্থাপন করা যায়নি। নয় বছর ধরে কাজ করা শিক্ষকদের চাকরি এভাবে কেড়ে নেওয়া হলে তা তাঁদের পরিবারগুলির উপর “অতলসীম ক্ষতি” ডেকে আনত বলে পর্যবেক্ষণ আদালতের।

আদালত স্পষ্ট করে দেয়, “ডেটা বিশ্লেষণে সিস্টেমেটিক ম্যালিসের প্রমাণ পাওয়া যায়নি। কয়েকজন অসফল প্রার্থীর অভিযোগের ভিত্তিতে গোটা ব্যবস্থা ভেঙে দেওয়া যায় না।” আদালতের নির্দেশে সিবিআই–এর তদন্তে ২৬৪টি নিয়োগে অনিয়মের প্রমাণ মিলেছিল, পরে আরও ৯৬ জন শিক্ষক নজরদারিতে আসেন। কিন্তু এই সংখ্যার ভিত্তিতে পুরো নিয়োগ প্রক্রিয়াকে বাতিল করা যায় না—এমনটাই মত ডিভিশন বেঞ্চের।

এর আগে সিঙ্গল বেঞ্চ aptitude test না থাকা, বাইরের সংস্থার ভূমিকা এবং চাকরি কেনাবেচার অভিযোগকে ভিত্তি করে একযোগে নিয়োগ বাতিলের নির্দেশ দিয়েছিল। ২০১৪ সালের নিয়োগে বড়সড় অনিয়ম হয়েছিল বলে দাবি করে বহু প্রার্থী হাইকোর্টে আবেদন করেন। প্রথমে অন্য এক বেঞ্চে শুনানি শুরু হলেও বিচারপতির রিকিউজ়ালের কারণে মামলাটি ডিভিশন বেঞ্চে আসে এবং ২০২৫ সালের এপ্রিল থেকে আনুষ্ঠানিক শুনানি শুরু হয়।

উল্লেখ্য, এর আগে সুপ্রিম কোর্ট ২০১৬ সালের এসএসসি প্যানেলের মাধ্যমে নিয়োগপ্রাপ্ত ২৫ হাজারেরও বেশি চাকরি বাতিলের রায় বহাল রেখেছিল। কিন্তু ২০১৪ সালের প্রাইমারি নিয়োগ মামলায় ডিভিশন বেঞ্চ স্পষ্ট জানিয়ে দিল—অল্পসংখ্যক অনিয়মের কারণে হাজার হাজার শিক্ষকের জীবন-জীবিকা ধ্বংস করা ন্যায়সংগত নয়।


Post a Comment

নবীনতর পূর্বতন