আরজি করের সন্দীপের বিরুদ্ধে দুর্নীতির অভিযোগ তোলা সেই আখতারও একই দায়ে অভিযুক্ত

২০২৩ সালে আরজি কর কলেজে আর্থিক অনিয়মের অভিযোগ প্রথম আনেন আখতার আলি। তিনি সেই সময় রাজ্য ভিজিল্যান্স কমিশনে লিখিত অভিযোগ করেন অধ্যক্ষ সন্দীপ ঘোষের বিরুদ্ধে।

আরজি করের সন্দীপের বিরুদ্ধে দুর্নীতির অভিযোগ তোলা সেই আখতারও একই দায়ে অভিযুক্ত
আর জি কর মেডিক‌্যাল কলেজ অ‌্যান্ড হসপিটাল। কলকাতা।

কলকাতা : আরজি কর মেডিক্যাল কলেজ ও হাসপাতালের আর্থিক দুর্নীতি তদন্তে নাটকীয় মোড়। যিনি প্রথম ওই প্রতিষ্ঠানের প্রাক্তন অধ্যক্ষ সন্দীপ ঘোষের বিরুদ্ধে দুর্নীতির অভিযোগ তুলেছিলেন, সেই আখতার আলি নিজেই এখন একই অভিযোগে অভিযুক্ত। শুক্রবার স্বাস্থ্য দফতর এক বিজ্ঞপ্তি জারি করে জানিয়েছে, সিবিআই তদন্তে তাঁর নাম ওঠার পর তাঁকে সাসপেন্ড করা হয়েছে।

বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়েছে, কলকাতা হাই কোর্টের নির্দেশে আরজি কর কলেজের আর্থিক অনিয়মের তদন্ত করছে সিবিআই। সেই তদন্তে দেখা গিয়েছে, হাসপাতালের তৎকালীন সহকারী সুপার হিসাবে আখতার আলি চিকিৎসা সরঞ্জাম কেনাবেচার তদারকি করতেন এবং পরে ডেপুটি সুপার পদে থেকে সেই প্রক্রিয়ায় নিজের প্রভাব খাটাতেন। অভিযোগ, সংশ্লিষ্ট সংস্থাগুলিকে আর্থিক সুবিধা পাইয়ে দেওয়ার বিনিময়ে তিনি লক্ষাধিক টাকার ঘুষ নেন। ২০২০ থেকে ২০২২ সালের মধ্যে তাঁর ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্টে প্রায় ২ লক্ষ ৩৯ হাজার টাকা জমা পড়েছে বলে দাবি করা হয়েছে। একই সময়ে তাঁর স্ত্রীর অ্যাকাউন্টেও ঢুকেছিল আরও ৫০ হাজার টাকা। তদন্তকারীরা জানিয়েছেন, ব্যক্তিগত বিমানযাত্রার ক্ষেত্রেও তিনি সরকারি পদমর্যাদা ব্যবহার করে আর্থিক সুবিধা নিয়েছিলেন।

এই প্রমাণের ভিত্তিতেই স্বাস্থ্য দফতর তাঁকে সাসপেন্ড করার সিদ্ধান্ত নেয়। তবে এ বিষয়ে আখতার আলি বলেন, “আমাকে যে অভিযোগে সাসপেন্ড করা হয়েছে, সেই সংক্রান্ত কোনও নথি আমি বা আমার আইনজীবী পাইনি। সরকার কেন এমন পদক্ষেপ নিল, তা স্পষ্ট নয়। শিগগিরই আমি আইনি পরামর্শ নেব।”

চিকিৎসক অনিকেত মাহাতো এ বিষয়ে মন্তব্য করেছেন, “নিরপেক্ষ তদন্তের প্রয়োজন। এক ডেপুটি সুপার যদি নিয়মবহির্ভূত কাজ করে থাকেন, তবে উচ্চপদস্থ কর্তারা কীভাবে তা জানলেন না? যারা জড়িত, তাদের নাম প্রকাশিত হওয়া উচিত।”

উল্লেখ্য, ২০২৩ সালে আরজি কর কলেজে আর্থিক অনিয়মের অভিযোগ প্রথম আনেন আখতার আলি। তিনি সেই সময় রাজ্য ভিজিল্যান্স কমিশনে লিখিত অভিযোগ করেন অধ্যক্ষ সন্দীপ ঘোষের বিরুদ্ধে। এরপর তাঁকে বদলি করে পাঠানো হয় মুর্শিদাবাদ মেডিক্যাল কলেজে, পরে উত্তর দিনাজপুরের কালিয়াগঞ্জ হাসপাতালে ডেপুটি সুপার পদে। সম্প্রতি তিনি সেই পদ থেকে ইস্তফা দেওয়ার ইচ্ছা প্রকাশ করেছিলেন, কিন্তু স্বাস্থ্য দফতর তাঁর পদত্যাগ গ্রহণ না করে বরং সাসপেন্ডের সিদ্ধান্ত জানিয়েছে।

Post a Comment

নবীনতর পূর্বতন