এসআইআর বিতর্কের মাঝেই ২০০২ সালের ভোটার তালিকা যাচাইয়ের নতুন ওয়েবসাইট চালু করল নির্বাচন কমিশন

ওয়েবসাইট চালু হওয়ার পর থেকেই হাজার হাজার ভোটার নাম খুঁজে দেখার চেষ্টা করেন, কিন্তু অনেকেই “HTTP Error 404” ও “Service Unavailable” বার্তা দেখতে পান।

এসআইআর বিতর্কের মাঝেই ২০০২ সালের ভোটার তালিকা যাচাইয়ের নতুন ওয়েবসাইট চালু করল নির্বাচন কমিশন

কলকাতা : এসআইআর প্রক্রিয়া নিয়ে রাজ্যজুড়ে বিতর্ক ও বিভ্রান্তির মধ্যেই শুক্রবার পশ্চিমবঙ্গের ভোটারদের জন্য নতুন ওয়েবসাইট চালু করল নির্বাচন কমিশন। নতুন পোর্টালটির ঠিকানা — [ceowestbengal.wb.gov.in](http://ceowestbengal.wb.gov.in)। এর মাধ্যমে ভোটাররা নিজেদের বা তাঁদের পিতামাতার নাম ২০০২ সালের ভোটার তালিকায় রয়েছে কি না, তা যাচাই করতে পারবেন।

২০০২ সালের ভোটার তালিকাকে এবার বিশেষ গুরুত্ব দিচ্ছে কমিশন, কারণ সেই তালিকায় যাঁদের নাম বা তাঁদের পিতামাতার নাম রয়েছে, তাঁদের আর নতুন করে কোনও নথি জমা দিতে হবে না। আসন্ন ২০২৬ সালের বিধানসভা নির্বাচনের আগে পশ্চিমবঙ্গজুড়ে প্রায় ৭.৬২ কোটি ভোটারকে নিয়ে চলছে বিশেষ নিবিড় সংশোধন (SIR) প্রক্রিয়া। ২০০২ সালে রাজ্যের ভোটার সংখ্যা ছিল প্রায় ৪.৫৮ কোটি।

ওয়েবসাইট চালু হওয়ার পর থেকেই হাজার হাজার ভোটার নাম খুঁজে দেখার চেষ্টা করেন, কিন্তু অনেকেই “HTTP Error 404” ও “Service Unavailable” বার্তা দেখতে পান। কখনও সাইট খুললেও বেশিরভাগ সময়ই তা অচল ছিল। কমিশনের পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে, একইসঙ্গে বিপুল সংখ্যক মানুষ লগইন করার চেষ্টা করায় সার্ভার ক্র্যাশ করে। কেন্দ্রীয় সরকারের অধীনে থাকা ন্যাশনাল ইনফরমেটিক্স সেন্টার (NIC) থেকে তথ্য রাজ্য ডেটা সেন্টারে স্থানান্তরিত করার কাজও চলছিল, যা সাময়িক ব্যাঘাত ঘটায়।

নির্বাচন কমিশনের এক আধিকারিক জানিয়েছেন, “অত্যধিক ট্রাফিকের জন্য সমস্যা হয়েছিল। সার্ভার শক্তিশালী করার কাজ চলছে। নতুন লিংকটি এখন সম্পূর্ণ কার্যকর।” পাশাপাশি চালু করা হয়েছে হেল্পলাইন নম্বর ১৮০০-১১-১৯৫০, যদিও অনেক কলারই দীর্ঘ প্রতীক্ষার অভিযোগ করেছেন।

এরই মধ্যে এসআইআর প্রক্রিয়া নিয়ে রাজ্যে আতঙ্ক ছড়িয়েছে। ঘোষণার পর দুই ব্যক্তি আত্মহত্যা করেছেন, তৃতীয় এক ব্যক্তি আত্মহত্যার চেষ্টা থেকে রক্ষা পেয়েছেন। অনেক ভোটারের মনে আশঙ্কা তৈরি হয়েছে— নাম না থাকলে ভোটাধিকার হারাতে পারেন বা অন্যান্য সরকারি সুবিধা থেকেও বঞ্চিত হতে পারেন।

শাসক তৃণমূল কংগ্রেস এই পরিস্থিতির জন্য বিজেপির “ভয় দেখানোর রাজনীতি”-কে দায়ী করেছে। অন্যদিকে, নির্বাচন কমিশন জানিয়েছে, উদ্বিগ্ন হওয়ার কিছু নেই— সকল যোগ্য ভোটারকেই যাচাই ও তথ্য সংশোধনের পর্যাপ্ত সুযোগ দেওয়া হবে চলতি বিশেষ নিবিড় সংশোধন প্রক্রিয়ায়।

তবে যাঁরা পুরনো তালিকায় নাম খুঁজে পেয়েছেন, তাঁদের নতুন সমস্যা হল ভোটকেন্দ্রের অবস্থান নির্ণয় করা। ২০০৮ সালের বৃহৎ এবং ২০১৫-১৬ সালের সীমিত সীমা-নির্ধারণের (delimitation) ফলে কেন্দ্র ও বুথগুলির সীমানা বদলে যাওয়ায় অনেকে আগের ভোটকেন্দ্রের অবস্থান মিলিয়ে নিতে পারছেন না। তবুও কমিশনের আশ্বাস— সকল ভোটারের তথ্য সঠিকভাবে হালনাগাদ হবে এবং কাউকে ভোটাধিকার থেকে বঞ্চিত করা হবে না।

Post a Comment

নবীনতর পূর্বতন