প্রশ্ন উঠছে, “সমীক্ষাটি কে পরিচালনা করেছে? কোন অনুমোদিত কমিটি এর দায়িত্বে ছিল? সমীক্ষার তথ্য কতটা বিশ্বাসযোগ্য?”
কোচি : আগামী ১ নভেম্বর কেরল প্রতিষ্ঠা দিবসের দিন তিরুবনন্তপুরমের সেন্ট্রাল স্টেডিয়ামে রাজ্যকে ‘চরম দারিদ্র্যমুক্ত’ ঘোষণা করার পরিকল্পনা করেছে কেরল সরকার। কিন্তু ঘোষণার আগেই সরকারের দাবির ভিত্তি, সমীক্ষা পদ্ধতি ও তথ্যের নির্ভরযোগ্যতা নিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন অর্থনীতিবিদ, সমাজকর্মী ও পরিবেশ আন্দোলনকারীরা। ২৩ জন বিশিষ্ট ব্যক্তির স্বাক্ষর করা এক খোলা চিঠিতে তাঁরা জানিয়েছেন, সরকার যে ৬৪,০০৬টি ‘চরম দারিদ্র্যপীড়িত’ পরিবারকে দারিদ্র্যের বাইরে আসার কথা বলছে, সেই সমীক্ষার প্রক্রিয়া ও পরিসংখ্যান যথেষ্ট অস্পষ্ট।
সরকারের দাবি, ২০২১ সালের জুলাই থেকে শুরু হওয়া দারিদ্র্য বিমোচন কর্মসূচির ফলে খাদ্য, নিরাপদ বাসস্থান, মৌলিক আয় ও স্বাস্থ্য—এই চারটি মানদণ্ডে বিশ্লেষণ করে ওই পরিবারগুলিকে চিহ্নিত করা হয়। এর ফলে কেরল নাকি দেশের প্রথম রাজ্য হতে চলেছে, যেখানে দারিদ্র্য নির্মূল ও ক্ষুধামুক্তির মতো স্থায়ী উন্নয়ন লক্ষ্য অর্জিত হয়েছে।
তবে এই দাবির তীব্র সমালোচনা করেছেন অর্থনীতিবিদ এম এ উম্মেন, মেরি জর্জ, সিডিএস-এর ফেলো কে পি কান্নন, বিজ্ঞান আন্দোলনের নেতা আর ভি জি মেনন ও ভূবিজ্ঞানী সি পি রাজেন্দ্রন প্রমুখ। তাঁদের প্রশ্ন—“সমীক্ষাটি কে পরিচালনা করেছে? কোন অনুমোদিত কমিটি এর দায়িত্বে ছিল? সমীক্ষার তথ্য কতটা বিশ্বাসযোগ্য?”
চিঠিতে আরও উল্লেখ করা হয়েছে, ২০১৩ সালের জাতীয় খাদ্য সুরক্ষা আইনের অধীনে কেরলের পাবলিক ডিস্ট্রিবিউশন সিস্টেমে অতি দরিদ্র শ্রেণির (অন্ত্যোদয় অন্ন যোজনা বা এএওয়াই) হলুদ কার্ডধারী পরিবারের সংখ্যা এখনও ৫.৯২ লক্ষ। এরা কেন্দ্রীয় সরকারের সহায়তায় বিনামূল্যে খাদ্যশস্য পান। তাহলে সরকার যদি এখন মাত্র ৬৪,০০৬টি পরিবারকে ‘চরম দরিদ্র’ বলে দাবি করে, তাহলে কি এই পরিবারগুলো এএওয়াই শ্রেণি থেকে বাদ পড়েছে? নাকি এএওয়াই শ্রেণিই বিলুপ্ত হচ্ছে?”
স্থানীয় স্বশাসন দফতরের সংজ্ঞা অনুযায়ী, ‘চরম দরিদ্র’ বলতে এমন মানুষদের বোঝানো হয় যাঁদের কোনও আয় নেই, দিনে দু’বেলা খেতেও পারেন না, রেশন পেলেও রান্না করতে পারেন না এবং যাঁদের স্বাস্থ্য অত্যন্ত খারাপ। প্রশ্ন উঠছে, সরকার কি এই ‘অগতিকাল’ বা অসহায় শ্রেণিকেই ‘চরম দরিদ্র’ বলে ঘোষণা করছে?
চিঠিতে আরও বলা হয়েছে, এই কর্মসূচি কি ২০০২ সালে শুরু হওয়া ‘আশ্রয়’ প্রকল্পের নব সংস্করণ? কারণ, তখন ১,১৮,৩০৯টি পরিবারকে দারিদ্র্যপীড়িত হিসেবে চিহ্নিত করা হয়েছিল, যা এখন কমে ৬৪,০০৬-এ নেমে এসেছে—এটা কীভাবে সম্ভব? বিশেষজ্ঞরা আরও প্রশ্ন তুলেছেন, ২০১১ সালের আদমশুমারি অনুযায়ী কেরলে ৪.৮৫ লক্ষ আদিবাসী মানুষ ১.১৬ লক্ষ পরিবারে বাস করেন। অথচ এখন সরকারের হিসাবে মাত্র ৬,৪০০টি আদিবাসী পরিবার ‘চরম দরিদ্র’ শ্রেণিতে পড়েছে—অর্থাৎ মাত্র ৫.৫ শতাংশ। “তাহলে কি বাকিরা দারিদ্র্য থেকে সম্পূর্ণ মুক্ত? তাঁদের জন্য কী পদক্ষেপ নেওয়া হয়েছে?”—প্রশ্ন তুলেছেন তাঁরা।
চিঠিতে সতর্ক করে বলা হয়েছে, “দারিদ্র্য ভারতের অন্যতম বৃহত্তম সামাজিক ও অর্থনৈতিক সমস্যা, সেটিকে প্রচারের হাতিয়ার হিসেবে ব্যবহার করা অনুচিত।” তবে কেরল সরকার জানিয়েছে, জনগণের অংশগ্রহণে করা সমীক্ষার ভিত্তিতেই ৬৪,০০৬টি পরিবারকে চরম দরিদ্র হিসেবে চিহ্নিত করা হয়েছে। খাদ্য, বাসস্থান, আয় ও স্বাস্থ্য সূচকে উন্নতির মাধ্যমেই রাজ্যকে ‘চরম দারিদ্র্যমুক্ত’ করার লক্ষ্য পূরণ হয়েছে বলে সরকারের দাবি।
![]() |
| প্রতিকী ছবি। |
কোচি : আগামী ১ নভেম্বর কেরল প্রতিষ্ঠা দিবসের দিন তিরুবনন্তপুরমের সেন্ট্রাল স্টেডিয়ামে রাজ্যকে ‘চরম দারিদ্র্যমুক্ত’ ঘোষণা করার পরিকল্পনা করেছে কেরল সরকার। কিন্তু ঘোষণার আগেই সরকারের দাবির ভিত্তি, সমীক্ষা পদ্ধতি ও তথ্যের নির্ভরযোগ্যতা নিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন অর্থনীতিবিদ, সমাজকর্মী ও পরিবেশ আন্দোলনকারীরা। ২৩ জন বিশিষ্ট ব্যক্তির স্বাক্ষর করা এক খোলা চিঠিতে তাঁরা জানিয়েছেন, সরকার যে ৬৪,০০৬টি ‘চরম দারিদ্র্যপীড়িত’ পরিবারকে দারিদ্র্যের বাইরে আসার কথা বলছে, সেই সমীক্ষার প্রক্রিয়া ও পরিসংখ্যান যথেষ্ট অস্পষ্ট।
সরকারের দাবি, ২০২১ সালের জুলাই থেকে শুরু হওয়া দারিদ্র্য বিমোচন কর্মসূচির ফলে খাদ্য, নিরাপদ বাসস্থান, মৌলিক আয় ও স্বাস্থ্য—এই চারটি মানদণ্ডে বিশ্লেষণ করে ওই পরিবারগুলিকে চিহ্নিত করা হয়। এর ফলে কেরল নাকি দেশের প্রথম রাজ্য হতে চলেছে, যেখানে দারিদ্র্য নির্মূল ও ক্ষুধামুক্তির মতো স্থায়ী উন্নয়ন লক্ষ্য অর্জিত হয়েছে।
তবে এই দাবির তীব্র সমালোচনা করেছেন অর্থনীতিবিদ এম এ উম্মেন, মেরি জর্জ, সিডিএস-এর ফেলো কে পি কান্নন, বিজ্ঞান আন্দোলনের নেতা আর ভি জি মেনন ও ভূবিজ্ঞানী সি পি রাজেন্দ্রন প্রমুখ। তাঁদের প্রশ্ন—“সমীক্ষাটি কে পরিচালনা করেছে? কোন অনুমোদিত কমিটি এর দায়িত্বে ছিল? সমীক্ষার তথ্য কতটা বিশ্বাসযোগ্য?”
চিঠিতে আরও উল্লেখ করা হয়েছে, ২০১৩ সালের জাতীয় খাদ্য সুরক্ষা আইনের অধীনে কেরলের পাবলিক ডিস্ট্রিবিউশন সিস্টেমে অতি দরিদ্র শ্রেণির (অন্ত্যোদয় অন্ন যোজনা বা এএওয়াই) হলুদ কার্ডধারী পরিবারের সংখ্যা এখনও ৫.৯২ লক্ষ। এরা কেন্দ্রীয় সরকারের সহায়তায় বিনামূল্যে খাদ্যশস্য পান। তাহলে সরকার যদি এখন মাত্র ৬৪,০০৬টি পরিবারকে ‘চরম দরিদ্র’ বলে দাবি করে, তাহলে কি এই পরিবারগুলো এএওয়াই শ্রেণি থেকে বাদ পড়েছে? নাকি এএওয়াই শ্রেণিই বিলুপ্ত হচ্ছে?”
স্থানীয় স্বশাসন দফতরের সংজ্ঞা অনুযায়ী, ‘চরম দরিদ্র’ বলতে এমন মানুষদের বোঝানো হয় যাঁদের কোনও আয় নেই, দিনে দু’বেলা খেতেও পারেন না, রেশন পেলেও রান্না করতে পারেন না এবং যাঁদের স্বাস্থ্য অত্যন্ত খারাপ। প্রশ্ন উঠছে, সরকার কি এই ‘অগতিকাল’ বা অসহায় শ্রেণিকেই ‘চরম দরিদ্র’ বলে ঘোষণা করছে?
চিঠিতে আরও বলা হয়েছে, এই কর্মসূচি কি ২০০২ সালে শুরু হওয়া ‘আশ্রয়’ প্রকল্পের নব সংস্করণ? কারণ, তখন ১,১৮,৩০৯টি পরিবারকে দারিদ্র্যপীড়িত হিসেবে চিহ্নিত করা হয়েছিল, যা এখন কমে ৬৪,০০৬-এ নেমে এসেছে—এটা কীভাবে সম্ভব? বিশেষজ্ঞরা আরও প্রশ্ন তুলেছেন, ২০১১ সালের আদমশুমারি অনুযায়ী কেরলে ৪.৮৫ লক্ষ আদিবাসী মানুষ ১.১৬ লক্ষ পরিবারে বাস করেন। অথচ এখন সরকারের হিসাবে মাত্র ৬,৪০০টি আদিবাসী পরিবার ‘চরম দরিদ্র’ শ্রেণিতে পড়েছে—অর্থাৎ মাত্র ৫.৫ শতাংশ। “তাহলে কি বাকিরা দারিদ্র্য থেকে সম্পূর্ণ মুক্ত? তাঁদের জন্য কী পদক্ষেপ নেওয়া হয়েছে?”—প্রশ্ন তুলেছেন তাঁরা।
চিঠিতে সতর্ক করে বলা হয়েছে, “দারিদ্র্য ভারতের অন্যতম বৃহত্তম সামাজিক ও অর্থনৈতিক সমস্যা, সেটিকে প্রচারের হাতিয়ার হিসেবে ব্যবহার করা অনুচিত।” তবে কেরল সরকার জানিয়েছে, জনগণের অংশগ্রহণে করা সমীক্ষার ভিত্তিতেই ৬৪,০০৬টি পরিবারকে চরম দরিদ্র হিসেবে চিহ্নিত করা হয়েছে। খাদ্য, বাসস্থান, আয় ও স্বাস্থ্য সূচকে উন্নতির মাধ্যমেই রাজ্যকে ‘চরম দারিদ্র্যমুক্ত’ করার লক্ষ্য পূরণ হয়েছে বলে সরকারের দাবি।

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন