এসআইআর-এর চাপে আরও এক বিএলও-র আত্মহত্যা, নির্বাচন কমিশনকে তীব্র আক্রমণ মমতার

রাজ্যের মুখ্য নির্বাচনী আধিকারিক জেলা শাসক ও জেলা নির্বাচনী আধিকারিকের কাছ থেকে বিস্তারিত রিপোর্ট চেয়েছেন। 

এসআইআর-এর চাপে আরও এক বিএলও-র আত্মহত্যা, নির্বাচন কমিশনকে তীব্র আক্রমণ মমতার

কলকাতা : পশ্চিমবঙ্গে চলতি ভোটার তালিকার বিশেষ নিবিড় সংশোধন (সিআইআর) পর্বের মধ্যেই ফের এক বুথ লেভেল অফিসারের আত্মহত্যায় উত্তেজনা ছড়িয়েছে রাজ্যে। নদিয়া জেলার কৃষ্ণনগরের ৫৩ বছর বয়সি পার্শ্ব-শিক্ষিকা রিংকু তরফদার শনিবার আত্মহত্যা করেন। অভিযোগ, নির্ধারিত সময়ের মধ্যে কাজ শেষ না করতে পারায় শাস্তি পেতে হবে—এই আশঙ্কাই তাঁকে চরম পদক্ষেপে ঠেলে দেয়। সুইসাইড নোটে রিংকু লিখে গিয়েছেন, মোট কাজের ‘নব্বই শতাংশ’ তিনি শেষ করেছিলেন, কিন্তু ডিজিটাল অংশটি করতে পারেননি। এই ব্যর্থতার জন্য ‘স্ট্রোক’ হওয়ার ভয়ে এবং এই বয়সে ‘জেলে যেতে হতে পারে’—এই আতঙ্ক তাঁকে গ্রাস করেছিল।

ঘটনার পর মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় তীব্র আক্রমণ করেছেন নির্বাচন কমিশনকে। সামাজিক মাধ্যমে তিনি লিখেছেন, “আর কত প্রাণ যাবে? আর কত মৃত্যু হলে এই এসআইআর বন্ধ হবে? এই প্রক্রিয়া এখন ভয়ানক আকার নিয়েছে।” তিনি জানান, রিংকু তরফদার তাঁর সুইসাইড নোটে সরাসরি নির্বাচন কমিশনকে দায়ী করেছেন, যা অত্যন্ত উদ্বেগজনক।

অন্যদিকে, বিজেপি দোষ চাপিয়েছে রাজ্য সরকারের উপর। বিজেপি বিধায়ক অগ্নিমিত্রা পাল অভিযোগ করেছেন, নির্বাচন কমিশন এসআইআর-এর জন্য ডেটা এন্ট্রি অপারেটর নিয়োগের নির্দেশ দিলেও রাজ্য সরকার সেই নির্দেশ মানেনি। রিংকুর পরিবারকে উদ্ধৃত করে তিনি দাবি করেন, রিংকু কম্পিউটারভিত্তিক কাজের বিষয়ে দক্ষ ছিলেন না, আর যদি ডেটা এন্ট্রি অপারেটর নিয়োগ করা হত, তবে এত বড় চাপ তাঁর উপর পড়ত না।

এদিকে, রাজ্যের মুখ্য নির্বাচনী আধিকারিক মনোজ আগরওয়াল রিংকুর মৃত্যুর ঘটনায় নদিয়ার জেলা শাসক ও জেলা নির্বাচনী আধিকারিকের কাছ থেকে বিস্তারিত রিপোর্ট চেয়ে পাঠিয়েছেন। ঘটনায় রাজ্যে প্রশাসনিক চাপ, নির্বাচন কমিশনের দায়িত্ব এবং সিআইআর প্রক্রিয়া নিয়ে নতুন করে জোরালো বিতর্ক শুরু হয়েছে।

Post a Comment

নবীনতর পূর্বতন