SIR প্রক্রিয়ায় জালিয়াতির অভিযোগে সরব অখিলেশ, বিজেপি–ইসি আঁতাতের অভিযোগ।
লখনউ: বিহার বিধানসভা নির্বাচনে বিরোধী জোটের খারাপ ফলের পর উত্তরপ্রদেশে বিজেপি সরকারের বিরুদ্ধে আক্রমণের ধার আরও তীব্র করলেন সমাজবাদী পার্টির প্রধান অখিলেশ যাদব। লখনউতে দলের প্রতিষ্ঠাতা মুলায়ম সিং যাদবের ৮৫তম জন্মবার্ষিকীতে সাংবাদিকদের সঙ্গে কথা বলতে গিয়ে তিনি অভিযোগ করেন, এসআইআর প্রক্রিয়ায় বড় ধরনের অনিয়ম চলছে এবং নির্বাচন কমিশন শাসক দলের সঙ্গে মিলেমিশে “এক বিশাল দুর্নীতির খেলা” তৈরি করছে।
অখিলেশের দাবি, যে সমস্ত বিধানসভা আসনে সমাজবাদী পার্টি শক্তিশালী অবস্থানে রয়েছে বা অতীতে জিতেছে, সেখান থেকে প্রায় ৫০ হাজার ভোট মুছে ফেলা হচ্ছে। শুধু উত্তরপ্রদেশ নয়, পশ্চিমবঙ্গেও একই ধরনের প্রস্তুতি চলছে বলে অভিযোগ করেন তিনি। তাঁর কথায়, “এখন আমরা এসআইআরের জটে জড়িয়ে আছি। কাগজের লড়াইও লড়তে হবে, নির্বাচন জিততে হবে।”
উত্তর প্রদেশের মুখ্যমন্ত্রী যোগী আদিত্যনাথকে উদ্দেশ করে পরোক্ষ কটাক্ষও করেন এসপি প্রধান। তিনি বলেন, “আমাকে যখনই বলা হবে, আমি রিঙে লাফ দিতে প্রস্তুত। কিন্তু কিছু মানুষের এমন পোশাক যে, রিঙে লাফ দেওয়াই সম্ভব হবে না।”
নির্বাচন কমিশনের ভূমিকাকে সরাসরি প্রশ্নবিদ্ধ করে অখিলেশ দাবি করেন, ২০২২ সালের নির্বাচনের সময় ব্যাপক হারে ভোটারের নাম বাদ পড়েছিল। তাঁর মতে, কমিশন রাজনৈতিক দলগুলিকে স্পষ্ট নির্দেশিকা দিক—কীভাবে কাজ করতে হবে। একই সঙ্গে তিনি এসআইআর পরিচালনার সময়সীমা বাড়ানোরও দাবি করেন। তাঁর অভিযোগ, উত্তর প্রদেশের মতো বৃহৎ রাজ্যে ভোটার তালিকা থেকে প্রতি বিধানসভায় ৫০ হাজারের বেশি নাম বাদ দেওয়ার “ষড়যন্ত্র” চলছে।
এসপি প্রধানের অভিযোগ, কমিশন বললেও যে ৯৯ শতাংশ মানুষ গণনার ফর্ম পেয়েছেন, বাস্তবে দলিত ও মুসলিম অধ্যুষিত এলাকায় বিইএলওরা যাচ্ছেন না। বরং শাসকদলের নেতাদের বাড়িতে বসেই সেসব ফর্ম বিলি হচ্ছে। পাশাপাশি বুথ লেভেল এজেন্টদের কোথাও প্রশিক্ষণ দেওয়া হচ্ছে না বলেও তিনি দাবি করেন। তাঁর কথায়, “ব্লোদের ওপর এমন চাপ তৈরি হয়েছে যে, পশ্চিমবঙ্গ ও তামিলনাড়ুতে আত্মহত্যার ঘটনাও ঘটেছে। প্রস্তুতি নেই, অথচ চাপ বাড়ছে।”
অখিলেশ আরও অভিযোগ করেন, বর্তমান সরকার দুর্নীতিতে ডুবেছে। “সরকারের হাতে আর সময় নেই। নদী পরিষ্কারের কথা বলছে, গঙ্গাকে নাকি এবার বাংলায় নিয়ে যাবে। ভিশন–২০৪৭, পুরনো প্রসঙ্গ—সবই বলবে, কিন্তু বর্তমানের সমস্যাগুলো নিয়ে মুখ খুলবে না।”
কেন্দ্রীয় সরকারের সমালোচনা করে তিনি বলেন, ডলার থেকে বৈদেশিক নীতি—প্রতিটি ক্ষেত্রেই ব্যর্থতা স্পষ্ট। “সব কিছু বড় শিল্পপতিদের নিয়ন্ত্রণে চলছে। একজন পাইলটকে হারালাম, আমরা কিছু বললেই দেশদ্রোহী বলা হয়,” মন্তব্য অখিলেশের।

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন