একটি বিষয় আদালত স্পষ্ট করে দিয়েছে—রাজ্যপাল ইচ্ছেমতো কোনও বিল অনির্দিষ্টভাবে আটকে রেখে দিতে পারবেন না। যদি অনুমোদন না দেন, তবে অবশ্যই বিলটি আইনসভায় ফেরত পাঠাতে হবে।
নয়াদিল্লি : রাষ্ট্রপতি দ্রৌপদী মুর্মুর পাঠানো চৌদ্দটি আইনি প্রশ্নের জবাবে সুপ্রিম কোর্ট বৃহস্পতিবার এক গুরুত্বপূর্ণ ব্যাখ্যা দিল। সংবিধানের ২০০, ২০১ ও ১৪৩ অনুচ্ছেদে রাষ্ট্রপতি ও রাজ্যপালের ভূমিকা, সীমা এবং ক্ষমতা নিয়ে যে ধোঁয়াশা বহুদিন ধরে রাজনৈতিক বিতর্ক সৃষ্টি করত, তা এ দিন অনেকটাই পরিষ্কার হল বলে মনে করছেন আইন বিশেষজ্ঞরা। বিশেষত, কোনও বিল রাজ্যপালের দপ্তরে পৌঁছানোর পরে তার ভবিষ্যৎ কী হবে—সেই প্রশ্নে আদালতের মতামত নতুন নজির স্থাপন করল।
অনুচ্ছেদ ২০০ ও ২০১—রাজ্যপালের কার্যপরিধি ও রাষ্ট্রপতির ভূমিকা—সংবিধানে উল্লেখ থাকলেও, কখনও কোনও সময়সীমা নির্দিষ্ট না থাকায় বহু বিল অনির্দিষ্টকালের জন্য ঝুলে থাকার ঘটনা ঘটেছে। এই অচলাবস্থাই রাষ্ট্রপতি প্রেরিত রেফারেন্সের মূল প্রশ্ন ছিল।
সুপ্রিম কোর্ট জানিয়ে দিল, অনুচ্ছেদ ২০০ অনুযায়ী কোনও বিল রাজ্যপালের কাছে পৌঁছালে তাঁর সামনে তিনটি বিকল্পই রয়েছে—স্বাক্ষর করে অনুমোদন দেওয়া, রাষ্ট্রপতির বিবেচনার জন্য বিলটি সংরক্ষণ করে পাঠাতে পারেন, অথবা অনুমোদন না দিয়ে বিলটি পুনর্বিবেচনার জন্য বিধানসভায় ফেরত পাঠানো। তবে একটি বিষয় আদালত স্পষ্ট করে দিয়েছে—রাজ্যপাল ইচ্ছেমতো কোনও বিল অনির্দিষ্টভাবে আটকে রেখে দিতে পারবেন না। যদি অনুমোদন না দেন, তবে অবশ্যই বিলটি আইনসভায় ফেরত পাঠাতে হবে।
রাজ্য মন্ত্রিসভার উপদেশ মানার বাধ্যবাধকতা প্রসঙ্গে আদালতের পর্যবেক্ষণ ছিল গুরুত্বপূর্ণ। অনুচ্ছেদ ১৬৩ অনুযায়ী সাধারণত রাজ্যপাল মন্ত্রিসভার উপদেশ অনুসারেই কাজ করেন। কিন্তু বিল-অনুমোদনের ক্ষেত্রে রাজ্যপালের স্বাধীন বিবেচনার অধিকার রয়েছে। আদালতের যুক্তি, যদি রাজ্যপাল উপদেশ মানতেই বাধ্য থাকেন, তবে কোনও বিল পুনর্বিবেচনার জন্য ফেরত পাঠানোর সাংবিধানিক ক্ষমতা তিনি কখনও প্রয়োগ করতে পারবেন না—যা সংবিধানের চেতনার পরিপন্থী।
রাষ্ট্রপতি ও রাজ্যপালের কার্যকলাপ বিচারাধীন হতে পারে কি না—রাষ্ট্রপতির অন্যতম প্রশ্ন ছিল এটি। সুপ্রিম কোর্ট স্পষ্ট জানায়, অনির্দিষ্ট, অযৌক্তিক ও অকারণ নীরবতা রাজ্যপালের ক্ষেত্রে বিচারাধীন হতে পারে। অর্থাৎ, কোনও বিলের উপর রাজ্যপাল দীর্ঘ সময় ধরে সিদ্ধান্ত না নিলে আদালত তাঁকে সিদ্ধান্ত নিতে নির্দেশ দিতে পারে। যদিও অনুচ্ছেদ ৩৬১ অনুসারে রাষ্ট্রপতি ও রাজ্যপাল ব্যক্তিগত দায়মুক্তি পান, এই দায়মুক্তি তাঁদের দপ্তরের সাংবিধানিক নিষ্ক্রিয়তাকে আড়াল করতে পারে না—এমনটাই স্পষ্ট বার্তা শীর্ষ আদালতের।
তবে রাজ্যপালের সংরক্ষণে রাষ্ট্রপতির কাছে পাঠানো বিল নিয়ে রাষ্ট্রপতির অনুমোদন বা অনুমোদন না দেওয়ার সিদ্ধান্ত আদালত পর্যালোচনা করতে পারে না। অনুচ্ছেদ ২০১–এ বর্ণিত এই সিদ্ধান্ত ‘বিচারিক পর্যালোচনা-অযোগ্য’—এ কথা পুনর্ব্যক্ত করেছেন বিচারপতিরা।
সময়সীমা নির্ধারণে আদালত জানিয়ে দেয়, বিচার বিভাগ সংবিধানে নির্ধারিত শব্দবন্ধ “যথাশীঘ্র”—এর স্থানে কোনও কঠোর সময়সীমা বসাতে পারে না। তাই রাজ্যপাল বা রাষ্ট্রপতিকে নির্দিষ্ট সময়ের মধ্যে সিদ্ধান্ত নিতে বাধ্য করা যাবে না। আদালতের মতে, এটি সংবিধানের কাঠামোর সঙ্গে সঙ্গতিপূর্ণ নয়।
রাষ্ট্রপতির রেফারেন্সের সূত্রপাত হয়েছিল গত মে মাসে, সংবিধানের ১৪৩ অনুচ্ছেদ অনুযায়ী কোনও গুরুত্বপূর্ণ আইনগত বা বাস্তব প্রশ্নে শীর্ষ আদালতের মতামত চেয়ে। আদালত জানিয়েছে, প্রতিটি বিল রাষ্ট্রপতির সামনে এলেই আদালতের পরামর্শ নেওয়ার প্রয়োজন নেই; রাষ্ট্রপতির নিজস্ব সন্তুষ্টিই যথেষ্ট।
শীর্ষ আদালত আরও জানায়, বিচারিক পর্যালোচনার আওতা কেবল প্রণীত আইনের ক্ষেত্রে। যেসব বিল আইন হয়নি, সেগুলির বৈধতা নিয়ে আদালত কোনও মন্তব্য করতে পারে না।
রাষ্ট্রপতি ও রাজ্যপালের ভূমিকা নিয়ে চলমান রাজনৈতিক ও সাংবিধানিক জটিলতার মাঝে সুপ্রিম কোর্টের এই ব্যাখ্যা ভবিষ্যতে আইন প্রণয়ন প্রক্রিয়ার স্বচ্ছতা ও গতিশীলতা বাড়াবে বলে মনে করা হচ্ছে। রাজ্য আইনসভা ও সাংবিধানিক পদাধিকারীদের সম্পর্কের সীমা–রূপরেখা এ দিনের রায়ে স্পষ্টত নবায়িত হল।
নয়াদিল্লি : রাষ্ট্রপতি দ্রৌপদী মুর্মুর পাঠানো চৌদ্দটি আইনি প্রশ্নের জবাবে সুপ্রিম কোর্ট বৃহস্পতিবার এক গুরুত্বপূর্ণ ব্যাখ্যা দিল। সংবিধানের ২০০, ২০১ ও ১৪৩ অনুচ্ছেদে রাষ্ট্রপতি ও রাজ্যপালের ভূমিকা, সীমা এবং ক্ষমতা নিয়ে যে ধোঁয়াশা বহুদিন ধরে রাজনৈতিক বিতর্ক সৃষ্টি করত, তা এ দিন অনেকটাই পরিষ্কার হল বলে মনে করছেন আইন বিশেষজ্ঞরা। বিশেষত, কোনও বিল রাজ্যপালের দপ্তরে পৌঁছানোর পরে তার ভবিষ্যৎ কী হবে—সেই প্রশ্নে আদালতের মতামত নতুন নজির স্থাপন করল।
অনুচ্ছেদ ২০০ ও ২০১—রাজ্যপালের কার্যপরিধি ও রাষ্ট্রপতির ভূমিকা—সংবিধানে উল্লেখ থাকলেও, কখনও কোনও সময়সীমা নির্দিষ্ট না থাকায় বহু বিল অনির্দিষ্টকালের জন্য ঝুলে থাকার ঘটনা ঘটেছে। এই অচলাবস্থাই রাষ্ট্রপতি প্রেরিত রেফারেন্সের মূল প্রশ্ন ছিল।
সুপ্রিম কোর্ট জানিয়ে দিল, অনুচ্ছেদ ২০০ অনুযায়ী কোনও বিল রাজ্যপালের কাছে পৌঁছালে তাঁর সামনে তিনটি বিকল্পই রয়েছে—স্বাক্ষর করে অনুমোদন দেওয়া, রাষ্ট্রপতির বিবেচনার জন্য বিলটি সংরক্ষণ করে পাঠাতে পারেন, অথবা অনুমোদন না দিয়ে বিলটি পুনর্বিবেচনার জন্য বিধানসভায় ফেরত পাঠানো। তবে একটি বিষয় আদালত স্পষ্ট করে দিয়েছে—রাজ্যপাল ইচ্ছেমতো কোনও বিল অনির্দিষ্টভাবে আটকে রেখে দিতে পারবেন না। যদি অনুমোদন না দেন, তবে অবশ্যই বিলটি আইনসভায় ফেরত পাঠাতে হবে।
রাজ্য মন্ত্রিসভার উপদেশ মানার বাধ্যবাধকতা প্রসঙ্গে আদালতের পর্যবেক্ষণ ছিল গুরুত্বপূর্ণ। অনুচ্ছেদ ১৬৩ অনুযায়ী সাধারণত রাজ্যপাল মন্ত্রিসভার উপদেশ অনুসারেই কাজ করেন। কিন্তু বিল-অনুমোদনের ক্ষেত্রে রাজ্যপালের স্বাধীন বিবেচনার অধিকার রয়েছে। আদালতের যুক্তি, যদি রাজ্যপাল উপদেশ মানতেই বাধ্য থাকেন, তবে কোনও বিল পুনর্বিবেচনার জন্য ফেরত পাঠানোর সাংবিধানিক ক্ষমতা তিনি কখনও প্রয়োগ করতে পারবেন না—যা সংবিধানের চেতনার পরিপন্থী।
রাষ্ট্রপতি ও রাজ্যপালের কার্যকলাপ বিচারাধীন হতে পারে কি না—রাষ্ট্রপতির অন্যতম প্রশ্ন ছিল এটি। সুপ্রিম কোর্ট স্পষ্ট জানায়, অনির্দিষ্ট, অযৌক্তিক ও অকারণ নীরবতা রাজ্যপালের ক্ষেত্রে বিচারাধীন হতে পারে। অর্থাৎ, কোনও বিলের উপর রাজ্যপাল দীর্ঘ সময় ধরে সিদ্ধান্ত না নিলে আদালত তাঁকে সিদ্ধান্ত নিতে নির্দেশ দিতে পারে। যদিও অনুচ্ছেদ ৩৬১ অনুসারে রাষ্ট্রপতি ও রাজ্যপাল ব্যক্তিগত দায়মুক্তি পান, এই দায়মুক্তি তাঁদের দপ্তরের সাংবিধানিক নিষ্ক্রিয়তাকে আড়াল করতে পারে না—এমনটাই স্পষ্ট বার্তা শীর্ষ আদালতের।
তবে রাজ্যপালের সংরক্ষণে রাষ্ট্রপতির কাছে পাঠানো বিল নিয়ে রাষ্ট্রপতির অনুমোদন বা অনুমোদন না দেওয়ার সিদ্ধান্ত আদালত পর্যালোচনা করতে পারে না। অনুচ্ছেদ ২০১–এ বর্ণিত এই সিদ্ধান্ত ‘বিচারিক পর্যালোচনা-অযোগ্য’—এ কথা পুনর্ব্যক্ত করেছেন বিচারপতিরা।
সময়সীমা নির্ধারণে আদালত জানিয়ে দেয়, বিচার বিভাগ সংবিধানে নির্ধারিত শব্দবন্ধ “যথাশীঘ্র”—এর স্থানে কোনও কঠোর সময়সীমা বসাতে পারে না। তাই রাজ্যপাল বা রাষ্ট্রপতিকে নির্দিষ্ট সময়ের মধ্যে সিদ্ধান্ত নিতে বাধ্য করা যাবে না। আদালতের মতে, এটি সংবিধানের কাঠামোর সঙ্গে সঙ্গতিপূর্ণ নয়।
রাষ্ট্রপতির রেফারেন্সের সূত্রপাত হয়েছিল গত মে মাসে, সংবিধানের ১৪৩ অনুচ্ছেদ অনুযায়ী কোনও গুরুত্বপূর্ণ আইনগত বা বাস্তব প্রশ্নে শীর্ষ আদালতের মতামত চেয়ে। আদালত জানিয়েছে, প্রতিটি বিল রাষ্ট্রপতির সামনে এলেই আদালতের পরামর্শ নেওয়ার প্রয়োজন নেই; রাষ্ট্রপতির নিজস্ব সন্তুষ্টিই যথেষ্ট।
শীর্ষ আদালত আরও জানায়, বিচারিক পর্যালোচনার আওতা কেবল প্রণীত আইনের ক্ষেত্রে। যেসব বিল আইন হয়নি, সেগুলির বৈধতা নিয়ে আদালত কোনও মন্তব্য করতে পারে না।
রাষ্ট্রপতি ও রাজ্যপালের ভূমিকা নিয়ে চলমান রাজনৈতিক ও সাংবিধানিক জটিলতার মাঝে সুপ্রিম কোর্টের এই ব্যাখ্যা ভবিষ্যতে আইন প্রণয়ন প্রক্রিয়ার স্বচ্ছতা ও গতিশীলতা বাড়াবে বলে মনে করা হচ্ছে। রাজ্য আইনসভা ও সাংবিধানিক পদাধিকারীদের সম্পর্কের সীমা–রূপরেখা এ দিনের রায়ে স্পষ্টত নবায়িত হল।

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন