মুখ্যমন্ত্রীর কথায়, কথায়, এই প্রক্রিয়া মানুষের মধ্যে ভয়, অনিশ্চয়তা ও মানসিক বিপর্যয়ের সৃষ্টি করেছে।
কলকাতা : রাজ্যে বিশেষ নিবিড় সংশোধন (এসআইআর) প্রক্রিয়া নিয়ে পরিস্থিতি ক্রমেই উদ্বেগজনক হয়ে উঠছে। মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় বৃহস্পতিবার দেশের মুখ্য নির্বাচন কমিশনার জ্ঞানেশ কুমারকে চিঠি লিখে অবিলম্বে এই প্রক্রিয়া স্থগিতের দাবি তুলেছেন। তাঁর অভিযোগ, অপরিকল্পিত ও অমানবিক কাজের চাপে সাধারণ মানুষ থেকে শুরু করে নির্বাচনী কাজে যুক্ত ব্লক লেভেল অফিসার (বিএলও)—সকলেই চরম মানসিক ও শারীরিক চাপের মধ্যে রয়েছেন, যার ফলে একের পর এক মৃত্যুর ঘটনা ঘটছে।
মুখ্যমন্ত্রী চিঠিতে লিখেছেন, “এসআইআর ঘিরে পরিস্থিতি গভীর উদ্বেগজনক পর্যায়ে পৌঁছেছে… কর্মকর্তা এবং নাগরিকদের উপর যেভাবে তা চাপিয়ে দেওয়া হচ্ছে তা শুধু অপরিকল্পিত ও বিশৃঙ্খলই নয়, বিপজ্জনকও।” তাঁর কথায়, এই প্রক্রিয়া মানুষের মধ্যে ভয়, অনিশ্চয়তা ও মানসিক বিপর্যয়ের সৃষ্টি করেছে। ইতিমধ্যেই কয়েকজনের মৃত্যু হয়েছে এবং আরও অনেকে অসুস্থ হয়ে পড়ছেন।
চিঠি পাঠানোর কয়েক ঘণ্টা আগে রাজস্থানের সওয়াই মাধোপুরে এক বিএলওর মৃত্যু হয়। মৃত হরিওম বৈরোয়া ওরফে হরিরামের পরিবার জানিয়েছে, কয়েক দিন ধরেই এসআইআর-সংক্রান্ত কাজের প্রবল চাপে তিনি গুরুতর মানসিক অশান্তির মধ্যে ছিলেন। এমনকি পরিবারের সঙ্গেও কথা বলা বন্ধ করে দিয়েছিলেন। বুধবার হৃদরোগে আক্রান্ত হয়ে তাঁর মৃত্যু হয়। বুধবার রাতে উত্তর দিনাজপুরের রায়গঞ্জে আরও এক বিএলও অতিরিক্ত কাজের চাপে দায়িত্ব পালনের সময় অসুস্থ হয়ে পড়েন। মমতার অভিযোগ, “এই অব্যবস্থাপনার মানবিক মূল্য এখন অসহনীয়।”
রাজ্যে একের পর এক মৃত্যুর ঘটনায় মুখ্যমন্ত্রী ক্ষোভপ্রকাশ করলেও নির্বাচন কমিশন এদিন কোনও মন্তব্য না করলেও রাতে বেলেঘাটার সাত বিএলওকে কাজের গাফিলতির অভিযোগে শোকজ করা হয়। শুক্রবারের মধ্যেই তাঁদের জবাব পাঠাতে বলা হয়েছে। মমতার দাবি, সমস্যা সমাধানের বদলে কমিশন উল্টে ভয় দেখানোর পথে হাঁটছে।
চিঠিতে মুখ্যমন্ত্রী কঠোর ভাষায় জানান, এসআইআর-এর প্রশিক্ষণে গুরুতর ত্রুটি রয়েছে। বাধ্যতামূলক নথিপত্র সংক্রান্ত স্পষ্ট নির্দেশ নেই। মানুষের কাজের সময় ঘরে ঘরে গিয়ে সাক্ষাৎ করার যে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে, তা অবাস্তব। সার্ভার সমস্যা ও অনলাইন ফর্ম জমা দেওয়ার ক্ষেত্রে ঘনঘন ত্রুটি বিএলওদের আরও বিপাকে ফেলছে। তাঁর কথায়, “পর্যাপ্ত প্রস্তুতি, পরিকল্পনা বা যোগাযোগ ছাড়া এই প্রক্রিয়া প্রথম দিন থেকেই পঙ্গু হয়ে আছে।”
মমতা আরও লিখেছেন, বিএলওদের অধিকাংশই শিক্ষক ও ফ্রন্টলাইন কর্মী। তাঁদের নিয়মিত দায়িত্বের পাশাপাশি ঘরে ঘরে জরিপ, অনলাইন জমা, জটিল ডেটা আপলোড—সবই একসঙ্গে সামলাতে হচ্ছে। সেই সঙ্গে রয়েছে অসম্ভব সময়সীমা, অনলাইন ডেটা এন্ট্রিতে অল্প সহায়তা এবং ভুল হলে শাস্তির ভয়। তাঁর মতে, এই অবাস্তব চাপের কারণে অনেক বিএলও বাধ্য হচ্ছেন ভুল বা অসম্পূর্ণ তথ্য জমা দিতে, যা ভোটার তালিকার অখণ্ডতাকে ক্ষতিগ্রস্ত করছে এবং প্রকৃত ভোটারদের ভোটাধিকারও বিপন্ন করছে।
চিঠিতে আরও উল্লেখ করেন, বর্তমানে রাজ্যে ধান কাটার মরশুম চলছে। পাশাপাশি রবি মরশুমের আলু চাষের ব্যস্ততা চূড়ান্ত পর্যায়ে। এই সময়ে লক্ষ লক্ষ চাষি ও শ্রমিকদের এসআইআর গণনায় অংশগ্রহণের প্রত্যাশা বাস্তবসম্মত নয়। তাঁর অভিযোগ, “কমিশন বাস্তবতা মানছে না, উল্টে কারণ দর্শানোর নোটিস ঝুলিয়ে চাপ সৃষ্টি করছে।”
বিএলওদের অবদানের প্রশংসা করলেও মুখ্যমন্ত্রী বারবার বলেছেন, তাঁদের এমন অমানবিক কাজের চাপে ফেলা ঠিক নয়। তাঁর দাবি, পূর্বে তিন বছরে সম্পন্ন হওয়ার মতো বিস্তৃত সংশোধনী কাজকে তিন মাসের সংকীর্ণ সময়সীমায় গুঁজে দেওয়া হয়েছে, ফলে প্রশাসনিক ও মানবিক উভয় স্তরেই বিপর্যয় তৈরি হয়েছে।
চিঠির শেষে মমতা স্পষ্ট ভাষায় জানিয়ে দিয়েছেন, “এই অপরিকল্পিত, জবরদস্তিমূলক অভিযান অব্যাহত রাখলে তা আরও বহু জীবন বিপন্ন করবে এবং নির্বাচনী সংশোধন প্রক্রিয়ার বৈধতাকেও প্রশ্নের মুখে ফেলবে।” নির্বাচন কমিশনের কাছে তাঁর আবেদন, “অবিলম্বে দায়িত্বশীল ও মানবিক সিদ্ধান্ত নেওয়া হোক।”
কলকাতা : রাজ্যে বিশেষ নিবিড় সংশোধন (এসআইআর) প্রক্রিয়া নিয়ে পরিস্থিতি ক্রমেই উদ্বেগজনক হয়ে উঠছে। মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় বৃহস্পতিবার দেশের মুখ্য নির্বাচন কমিশনার জ্ঞানেশ কুমারকে চিঠি লিখে অবিলম্বে এই প্রক্রিয়া স্থগিতের দাবি তুলেছেন। তাঁর অভিযোগ, অপরিকল্পিত ও অমানবিক কাজের চাপে সাধারণ মানুষ থেকে শুরু করে নির্বাচনী কাজে যুক্ত ব্লক লেভেল অফিসার (বিএলও)—সকলেই চরম মানসিক ও শারীরিক চাপের মধ্যে রয়েছেন, যার ফলে একের পর এক মৃত্যুর ঘটনা ঘটছে।
মুখ্যমন্ত্রী চিঠিতে লিখেছেন, “এসআইআর ঘিরে পরিস্থিতি গভীর উদ্বেগজনক পর্যায়ে পৌঁছেছে… কর্মকর্তা এবং নাগরিকদের উপর যেভাবে তা চাপিয়ে দেওয়া হচ্ছে তা শুধু অপরিকল্পিত ও বিশৃঙ্খলই নয়, বিপজ্জনকও।” তাঁর কথায়, এই প্রক্রিয়া মানুষের মধ্যে ভয়, অনিশ্চয়তা ও মানসিক বিপর্যয়ের সৃষ্টি করেছে। ইতিমধ্যেই কয়েকজনের মৃত্যু হয়েছে এবং আরও অনেকে অসুস্থ হয়ে পড়ছেন।
চিঠি পাঠানোর কয়েক ঘণ্টা আগে রাজস্থানের সওয়াই মাধোপুরে এক বিএলওর মৃত্যু হয়। মৃত হরিওম বৈরোয়া ওরফে হরিরামের পরিবার জানিয়েছে, কয়েক দিন ধরেই এসআইআর-সংক্রান্ত কাজের প্রবল চাপে তিনি গুরুতর মানসিক অশান্তির মধ্যে ছিলেন। এমনকি পরিবারের সঙ্গেও কথা বলা বন্ধ করে দিয়েছিলেন। বুধবার হৃদরোগে আক্রান্ত হয়ে তাঁর মৃত্যু হয়। বুধবার রাতে উত্তর দিনাজপুরের রায়গঞ্জে আরও এক বিএলও অতিরিক্ত কাজের চাপে দায়িত্ব পালনের সময় অসুস্থ হয়ে পড়েন। মমতার অভিযোগ, “এই অব্যবস্থাপনার মানবিক মূল্য এখন অসহনীয়।”
রাজ্যে একের পর এক মৃত্যুর ঘটনায় মুখ্যমন্ত্রী ক্ষোভপ্রকাশ করলেও নির্বাচন কমিশন এদিন কোনও মন্তব্য না করলেও রাতে বেলেঘাটার সাত বিএলওকে কাজের গাফিলতির অভিযোগে শোকজ করা হয়। শুক্রবারের মধ্যেই তাঁদের জবাব পাঠাতে বলা হয়েছে। মমতার দাবি, সমস্যা সমাধানের বদলে কমিশন উল্টে ভয় দেখানোর পথে হাঁটছে।
চিঠিতে মুখ্যমন্ত্রী কঠোর ভাষায় জানান, এসআইআর-এর প্রশিক্ষণে গুরুতর ত্রুটি রয়েছে। বাধ্যতামূলক নথিপত্র সংক্রান্ত স্পষ্ট নির্দেশ নেই। মানুষের কাজের সময় ঘরে ঘরে গিয়ে সাক্ষাৎ করার যে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে, তা অবাস্তব। সার্ভার সমস্যা ও অনলাইন ফর্ম জমা দেওয়ার ক্ষেত্রে ঘনঘন ত্রুটি বিএলওদের আরও বিপাকে ফেলছে। তাঁর কথায়, “পর্যাপ্ত প্রস্তুতি, পরিকল্পনা বা যোগাযোগ ছাড়া এই প্রক্রিয়া প্রথম দিন থেকেই পঙ্গু হয়ে আছে।”
মমতা আরও লিখেছেন, বিএলওদের অধিকাংশই শিক্ষক ও ফ্রন্টলাইন কর্মী। তাঁদের নিয়মিত দায়িত্বের পাশাপাশি ঘরে ঘরে জরিপ, অনলাইন জমা, জটিল ডেটা আপলোড—সবই একসঙ্গে সামলাতে হচ্ছে। সেই সঙ্গে রয়েছে অসম্ভব সময়সীমা, অনলাইন ডেটা এন্ট্রিতে অল্প সহায়তা এবং ভুল হলে শাস্তির ভয়। তাঁর মতে, এই অবাস্তব চাপের কারণে অনেক বিএলও বাধ্য হচ্ছেন ভুল বা অসম্পূর্ণ তথ্য জমা দিতে, যা ভোটার তালিকার অখণ্ডতাকে ক্ষতিগ্রস্ত করছে এবং প্রকৃত ভোটারদের ভোটাধিকারও বিপন্ন করছে।
চিঠিতে আরও উল্লেখ করেন, বর্তমানে রাজ্যে ধান কাটার মরশুম চলছে। পাশাপাশি রবি মরশুমের আলু চাষের ব্যস্ততা চূড়ান্ত পর্যায়ে। এই সময়ে লক্ষ লক্ষ চাষি ও শ্রমিকদের এসআইআর গণনায় অংশগ্রহণের প্রত্যাশা বাস্তবসম্মত নয়। তাঁর অভিযোগ, “কমিশন বাস্তবতা মানছে না, উল্টে কারণ দর্শানোর নোটিস ঝুলিয়ে চাপ সৃষ্টি করছে।”
বিএলওদের অবদানের প্রশংসা করলেও মুখ্যমন্ত্রী বারবার বলেছেন, তাঁদের এমন অমানবিক কাজের চাপে ফেলা ঠিক নয়। তাঁর দাবি, পূর্বে তিন বছরে সম্পন্ন হওয়ার মতো বিস্তৃত সংশোধনী কাজকে তিন মাসের সংকীর্ণ সময়সীমায় গুঁজে দেওয়া হয়েছে, ফলে প্রশাসনিক ও মানবিক উভয় স্তরেই বিপর্যয় তৈরি হয়েছে।
চিঠির শেষে মমতা স্পষ্ট ভাষায় জানিয়ে দিয়েছেন, “এই অপরিকল্পিত, জবরদস্তিমূলক অভিযান অব্যাহত রাখলে তা আরও বহু জীবন বিপন্ন করবে এবং নির্বাচনী সংশোধন প্রক্রিয়ার বৈধতাকেও প্রশ্নের মুখে ফেলবে।” নির্বাচন কমিশনের কাছে তাঁর আবেদন, “অবিলম্বে দায়িত্বশীল ও মানবিক সিদ্ধান্ত নেওয়া হোক।”

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন