বিশ্বকাপ জয়ী রিচা ঘোষকে ইডেনে সংবর্ধনা, ক্রিকেটে নতুন আশা জাগল বাংলায়

রাজ্য পুলিশের ডিএসপি হিসেবে নিয়োগপত্রও তাঁর হাতে তুলে দেওয়া হয়েছে। দেওয়া হয় রাজ্যের বঙ্গভূষণ সম্মানও।

বিশ্বকাপ জয়ী রিচা ঘোষকে ইডেনে সংবর্ধনা, ক্রিকেটে নতুন আশা জাগল বাংলায়
ইডেনে রিচা ঘোষের হাতে বঙ্গভূষণ সম্মান তুলে দিচ্ছেন মুখ্যমন্ত্রী। রয়েছেন (বাঁ দিক থেকে) মিমি চক্রবর্তী, অরূপ বিশ্বাস, ঝুলন গোস্বামী, সৌরভ গঙ্গোপাধ্যায়। শনিবার।

কলকাতা : শিলিগুড়ির পর এবার কলকাতায় — বাংলার প্রথম বিশ্বকাপজয়ী ক্রিকেটারের মর্যাদায় ইডেন গার্ডেন্সে রিচা ঘোষের সংবর্ধনা অনুষ্ঠান। রবিবার সিএবি প্রেসিডেন্ট সৌরভ গঙ্গোপাধ্যায়ের উদ্যোগে অনুষ্ঠিত এ অনুষ্ঠানে রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় উপস্থিত ছিলেন। তিনি রিচাকে উত্তরীয়, পুষ্পস্তবক ও মিষ্টির পর সোনার ব্যাট ও বল তুলে দেন। বিশ্বকাপ ফাইনালে ৩৪ রান করার স্মৃতিচারণ করে সিএবি তাকে ৩৪ লক্ষ টাকার চেকও প্রদান করে। অনুষ্ঠানে পরে রাজ্য সরকার থেকে 'বঙ্গভূষণ' সম্মান দেওয়া হয় এবং মুখ্যমন্ত্রী রিচার গলায় একটি সোনার হার পরিয়ে দেন। পাশাপাশি রাজ্য পুলিশের ডিএসপি (ডেপুটি সুপারিনটেনডেন্ট অফ পুলিশ) হিসেবে নিয়োগপত্রও তাঁর হাতে তুলে দেওয়া হয়েছে।

ইডেনে উপস্থিত ছিলেন ক্রীড়ামন্ত্রী অরূপ বিশ্বাস, কলকাতার পুলিশ কমিশনার মনোজ বর্মা, ভারতের প্রাক্তন অধিনায়ক ঝুলন গোস্বামীরাও। ঝুলন জানান, ২০১৩ সালে ট্যালেন্ট হান্টে তিনি প্রথম রিচাকে খুঁজে দেখেন — নিজের দুই দশক ধরে ভারতের জন্য খেলার অভিজ্ঞতা ভাঙা জবানিতে ঝুলন বলেছেন, "রিচা আমার দেখা সেরা প্রতিভা"। সৌরভ গঙ্গোপাধ্যায় রিচার খেলার কৌশল ও অবদানের প্রসঙ্গ তুলে বলেন, ছয় নম্বরে নেমে কঠিন পরিস্থিতি সামলানোই রিচার বিশেষ অবদান; তিনি বলেন, "একদিন আমি চাই রিচা ভারতের অধিনায়ক হোক" — সেই ইচ্ছা দ্বারাও সিএবির পক্ষ থেকে রিচাকে সমর্থন জানানো হয়।

অনুষ্ঠানে আরও ঘোষণা করা হয়, হাওড়ার ডুমুরজলায় রাজ্য সরকারের দিলা জায়গায় সিএবি এক বছরের মধ্যে বিশ্বমানের ক্রিকেট একাডেমি গড়ে তুলবে — সৌরভের প্রতিশ্রুতি অনুযায়ী সেখানে ভবিষ্যতে বাংলার ক্রিকেটাররা প্রশিক্ষণ পাবেন। প্রাক্তন ও বর্তমান ক্রিকেট সুপারিশরা অনুষ্ঠানকে আগামী দিনের বাংলার ক্রিকেটের জন্য এক নতুন উদ্বুদ্ধির সূচনা বলে অভিহিত করেন। রিচা নিজে বলেন, তিনি নেটে প্রতিটি পরিস্থিতির অনুশীলন করেন এবং ময়দানে কঠিন মুহূর্তে খেলতে পছন্দ করেন; সতীর্থরা তাকে 'ছোট মাহি' বলে ডাকে।

বাংলার প্রথম বিশ্বকাপজয়ী লোককে এমন সম্মান ও সরকারি পদ দেওয়া শুধু ব্যক্তিগত স্বীকৃতি নয়; এটি রাজ্য পর্যায়ে মহিলা ক্রীড়া বৃত্তের গুরুত্ব বৃদ্ধির একটি শক্তিশালী সংকেত। একদিকে রাজ্য ও সিএবি যখন খেলার মাধ্যমে তরুণ প্রতিভাদের সুযোগ বাড়ানোর প্রতিশ্রুতি দিচ্ছে, অন্যদিকে রিচার মতো খেলোয়াড়রা আদর্শ হয়ে উঠলে ভবিষ্যতে আরও অনেক যুবতী ক্রীড়াবিদ উৎসাহিত হবেন — এটিই হয়তো এই সংবর্ধনার সবচেয়ে বড় লাভ।

Post a Comment

নবীনতর পূর্বতন