মন্ত্রিসভা নিয়ে এনডিএর অন্দরে দর-কষাকষি চরমে। আপাতত স্পষ্ট—নীতীশ কুমারই ফের মুখ্যমন্ত্রী হচ্ছেন।
![]() |
| ফাইল ছবি। |
পাটনা : বিহারে নয়া সরকার গঠনের কাউন্টডাউন শুরু হয়ে গিয়েছে। চলতি সপ্তাহেই দায়িত্বভার গ্রহণ করতে পারে নতুন মন্ত্রিসভা। সবটাই নির্ভর করছে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির সময়সূচির ওপর। সূত্রের খবর, ১৯ বা ২০ নভেম্বর পাটনার গান্ধী ময়দানে শপথগ্রহণ অনুষ্ঠানের প্রস্তুতি ইতিমধ্যেই শুরু হয়ে গিয়েছে। শপথের দিনক্ষণ চূড়ান্ত করতে পাটনায় ও দিল্লিতে সমান্তরালভাবে চলছে বৈঠক ও আলোচনা।
এদিকে, মন্ত্রিসভা নিয়ে এনডিএর অন্দরে দর-কষাকষি চরমে। আপাতত স্পষ্ট—নীতীশ কুমারই ফের মুখ্যমন্ত্রী হচ্ছেন। পাশাপাশি দুই বা তিনজন উপমুখ্যমন্ত্রী থাকতে পারেন বলেও আভাস মিলছে। তবে কোন ফর্মুলায় মন্ত্রিসভা গঠন হবে, তা নিয়েই এখন রাজনৈতিক মহলে জল্পনা তুঙ্গে। পাটলিপুত্রের রাজনীতির গলি ঘুরে ঘুরে শোনা যাচ্ছে—শরিক দলগুলিকে ‘প্রতি ছ’জন বিধায়ক পিছু একজন মন্ত্রী’ ফর্মুলায় জায়গা দেওয়া হতে পারে। সে ক্ষেত্রে বিজেপির দখলে ১৫টি, জেডিইউ-র ১৪টি এবং এলজেপির তিনটি মন্ত্রিত্ব যাওয়ার কথা। অন্য শরিকদের জন্যও একজন করে মন্ত্রিত্ব রাখার সম্ভাবনা রয়েছে।
রবিবার দিল্লিতে জেডিইউ-র একটি প্রতিনিধি দল বিজেপির শীর্ষ নেতৃত্বের সঙ্গে দীর্ঘ বৈঠক করে। সেখানেই এই ফর্মুলায় সবুজ সংকেত মেলে বলে সূত্রের দাবি। প্রথম দফার আলোচনা সেরে সঞ্জয় ঝা-সহ জেডিইউ নেতৃত্ব ইতিমধ্যেই ফিরেছেন পাটনায়। আজ, সোমবার পাটনায় জেডিইউ শীর্ষ নেতৃত্বের বৈঠক হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে। ১৮ নভেম্বরের মধ্যেই এনডিএ জোটনেতা নির্বাচনের প্রক্রিয়া শেষ করতে তৎপর দুই বৃহৎ শরিক। অন্যদিকে, হাম নেতা জিতনরাম মাঝি, আরএলএম প্রধান উপেন্দ্র কুশওয়াহা এবং এলজেপি প্রধান চিরাগ পাসওয়ান দিল্লিতে গিয়ে মন্ত্রিত্ব নিয়ে আলোচনায় যোগ দেবেন।
এদিকে রবিবার নির্বাচন কমিশন আনুষ্ঠানিকভাবে ফলাফল রাজ্যপালের হাতে তুলে দিয়েছে। এর পরেই নতুন বিধানসভা গঠনের প্রক্রিয়া শুরু হয়েছে এবং মডেল কোড অফ কন্ডাক্ট তুলে নেওয়া হয়েছে। মুখ্যমন্ত্রী নীতীশ কুমার সোমবার মন্ত্রিসভার বৈঠক ডেকেছেন। বৈঠকের পরই তিনি রাজভবনে গিয়ে ইস্তফা জমা দিয়ে নতুন মন্ত্রিসভা গঠনের দাবি জানাতে পারেন বলে সূত্রের খবর।
অন্য দিকে, শপথগ্রহণ অনুষ্ঠানের প্রস্তুতি চলছে যুদ্ধকালীন তৎপরতায়। গান্ধী ময়দানে মঞ্চ নির্মাণ ও নিরাপত্তা পরিকাঠামো সাজানোর কাজ শুরু হয়ে গিয়েছে। প্রধানমন্ত্রী ছাড়াও বিজেপি শাসিত বেশ কয়েকটি রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রীরা উপস্থিত থাকতে পারেন অনুষ্ঠানে।
এবারের নির্বাচনে এনডিএর জয় অভূতপূর্ব। বিজেপি ৭৪ থেকে সরাসরি ৮৯ আসনে ও জেডিইউ ৪৩ থেকে ৮৫ আসনে পৌঁছে বিরোধীদের কার্যত বিপর্যস্ত করেছে। মহাগঠবন্ধনের মুখ্যমন্ত্রী প্রার্থী তেজস্বী যাদব অবশ্য নিজের আসন রাঘোপুর ধরে রেখেছেন এবং বিজেপির সতীশ কুমারকে প্রায় ১৪,৫৩২ ভোটে হারিয়েছেন। যদিও ভোট শেয়ারে আরজেডি সবচেয়ে এগিয়ে—২২.৭৬ শতাংশ। বিজেপি ও জেডিইউ-র শেয়ার যথাক্রমে ২০.৯০ এবং ১৮.৯২ শতাংশ।
সব মিলিয়ে বিহারের রাজনীতিতে নতুন সমীকরণকে কেন্দ্র করে চড়ছে উত্তাপ। এবার নজর শপথের দিন ও মন্ত্রিসভার চূড়ান্ত রূপে।

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন