সাউন্ডবক্স বন্ধ করা নিয়ে বিবাদ, বারুইপুরে কালীপুজোর রাতে যুবক খুন

পুলিশ জানিয়েছে, ঘটনার পর প্রয়োজনীয় আইনি ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে এবং তদন্ত চলছে। ঘটনার প্রকৃত কারণ ও সংঘর্ষের পরিণতি সম্পর্কে আরও জানার চেষ্টা চলছে।

সাউন্ডবক্স বন্ধের পর ঝগড়া, বারুইপুরে কালীপুজোর রাতে যুবকের খুন

কলকাতা: কালীপুজোকে কেন্দ্র করে সাউন্ডবক্স বন্ধ করার জেরে বারুইপুরের কালিকাপুরে এক যুবককে খুন করার অভিযোগ মিলেছে। মৃত যুবকের পরিচয় সনাতন নস্কর (৩২) বলে জানায় পুলিশ। বুধবার গভীর রাতে ঘটনাস্থল থেকে মূল অভিযুক্ত পিন্টু সাহা ও তাঁর স্ত্রীকে গ্রেপ্তার করে সোনারপুর থানার পুলিশ; ধৃতদের বিরুদ্ধে খুনের মামলা রুজু করে তদন্ত শুরু হয়েছে।

পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, সোনারপুরের একটি ছোট প্যান্ডেলে স্থানীয়ভাবে কালীপুজোর আয়োজন করা হয়েছিল এবং সনাতন ঐ প্যান্ডেলের জন্য সাউন্ডবক্স ব্যবহার করতেন। প্রতিদিন সকালে তিনি সাউন্ডবক্স প্যান্ডেলে রেখে দিতেন এবং রাতবেলার নিজ বাড়িতে নিয়ে যেতেন। একই এলাকার এক প্রতিবেশীর হৃদরোগজনিত সমস্যা থাকায় সেদিকে খেয়াল করে তিনি অনুরোধ করেছিলেন রাতে সাউন্ডবক্স না বাজানোর। ওইদিন রাত দশটার দিকে সাউন্ডবক্স বন্ধ করে তিনি নিজ বাড়িতে নিয়ে গেলে প্রতিবেশী পিন্টু সাহা ওই বিষয়ে রেগে যান বলে স্থানীয়দের অভিযোগ।

স্থানীয়রা জানান, ওই সন্ধেয় পিন্টু এক আত্মীয়সহ বাড়িতে মদ্যপান করছিলেন এবং রাতে সাউন্ডবক্স চালিয়ে নাচাগানও চলছিল। সনাতন হঠাৎ সাউন্ডবক্স বন্ধ করলে তাঁদের আনন্দে প্রতিবন্ধকতা সৃষ্টি হলে তাঁরা সনাতনের উপর চড়াও হন। ওই সংঘর্ষে সনাতন ধারালো অস্ত্র বের করলে বাগবিতণ্ডার মধ্যে তাঁর হাতে থাকা ছুরি থেকে পিন্টু-পরিবারের এক সদস্যের আঙ্গুল কেটে যাওয়ার সংবাদও পাওয়া যায়। মুখোমুখি ধস্তাধস্তির সময় পিন্টু সনাতনের কাছ থেকে ছুরি ছিনিয়ে নিয়ে সেটি সনাতনের বুকের ওপর ধরে বসিয়ে দেন; মাত্রাতিরিক্ত রক্তপাত ও আঘাতের ফলে সনাতন মাটিতে লুটিয়ে পড়েন। স্থানীয়রা তাঁকে উদ্ধার করে কালিকাপুর গ্রামীণ হাসপাতালে নিলে চিকিৎসক তাঁকে মৃত ঘোষণা করেন।

ঘটনার পর সোনারপুর থানা ঘটনাস্থলে এসে পিন্টু ও তার স্ত্রীর বিরুদ্ধে ধরপাকড় করে। স্থানীয় বাসিন্দা রেবতী মণ্ডল অভিযোগ করেন, “আমাদের বাড়িতে একজন বয়স্ক মানুষ অসুস্থ। তাই রাতের দিকে বক্স না বাজানোর অনুরোধ করেছিলাম। এভাবে প্রাণহানির ঘটনা হবে সে কথা কল্পনাও করিনি।” মৃতের মা সুলতা নস্কর জানান, তিনি সন্তানকে বারবার অনুরোধ করেছিলেন রাতে শব্দবাজি বন্ধ রাখার জন্য; তার কথাতেই ছেলে সাউন্ডবক্স বন্ধ করেছিলেন—“পিন্টু ছুরি দিয়ে আমার ছেলেকে মেরে ফেলেছে, ওকে কঠোর শাস্তি চাই।”

পুলিশ জানিয়েছে, ঘটনার পর প্রয়োজনীয় আইনি ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে এবং তদন্ত চলছে; ঘটনার প্রকৃত কারণ ও সংঘর্ষের পরিণতি সম্পর্কে আরও জানার চেষ্টা চলছে।


Post a Comment

নবীনতর পূর্বতন