দেশের প্রথম ‘চরম দারিদ্র্যমুক্ত’ রাজ্য কেরল, ঘোষণা মুখ্যমন্ত্রী পিনারাই বিজয়নের

বিজয়ন জানান, ২০২১ সালে নতুন মন্ত্রিসভা গঠনের পর প্রথম বৈঠকেই চরম দারিদ্র্য দূরীকরণকে রাজ্য সরকারের অন্যতম প্রধান লক্ষ্য হিসেবে নির্ধারণ করা হয়েছিল। 

দেশের প্রথম ‘চরম দারিদ্র্যমুক্ত’ রাজ্য কেরল, ঘোষণা মুখ্যমন্ত্রী পিনারাই বিজয়নের

কোচি : শনিবার কেরল রাজ্যের ইতিহাসে লেখা হল এক নতুন অধ্যায়। রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী পিনারাই বিজয়ন ঘোষণা করলেন, কেরল এখন ভারতের প্রথম ‘চরম দারিদ্র্যমুক্ত’ রাজ্য। কেরল প্রতিষ্ঠা দিবস উপলক্ষে রাজ্য বিধানসভায় বিশেষ অধিবেশনে মুখ্যমন্ত্রী বলেন, “আজকের দিনটি কেরলের ইতিহাসে এক মাইলফলক। আমরা এমন এক অবস্থায় পৌঁছেছি, যেখানে কেরলে আর চরম দারিদ্র্য নেই। এই বিধানসভা বহু ঐতিহাসিক সিদ্ধান্তের সাক্ষী, আজ নব কেরলের পথে আমরা আরও এক ধাপ এগোলাম।”

বিজয়ন জানান, ২০২১ সালে নতুন মন্ত্রিসভা গঠনের পর প্রথম বৈঠকেই চরম দারিদ্র্য দূরীকরণকে রাজ্য সরকারের অন্যতম প্রধান লক্ষ্য হিসেবে নির্ধারণ করা হয়েছিল। দীর্ঘ তিন বছরের প্রচেষ্টার পর সেই প্রতিশ্রুতি পূরণ হয়েছে বলে দাবি করেন তিনি। তবে কংগ্রেস নেতৃত্বাধীন ইউডিএফ বিরোধীরা মুখ্যমন্ত্রীর এই ঘোষণা ‘সম্পূর্ণ ভাঁওতা’ বলে উল্লেখ করে অধিবেশন বয়কট করে প্রতিবাদ জানায়।

কেরল সরকার জানায়, রাজ্যের দারিদ্র্য মোকাবিলায় একাধিক প্রকল্প চালু করা হয়েছে। এক হাজার কোটি টাকারও বেশি বিনিয়োগে প্রতিদিন ২০,৬৪৮টি পরিবারকে খাদ্য সরবরাহ করা হচ্ছে, যার মধ্যে ২,২১০ পরিবার পাচ্ছে রান্না করা গরম খাবার। চিকিৎসা ও ওষুধের সুবিধা পেয়েছেন ৮৫,৭২১ জন নাগরিক। ৫,৪০০-রও বেশি নতুন বাড়ি তৈরি বা নির্মীয়মান, ৫,৫২২টি বাড়ি সংস্কার করা হয়েছে এবং ২,৭১৩ ভূমিহীন পরিবারকে দেওয়া হয়েছে জমি। এছাড়া, ২১,২৬৩ জন নাগরিককে প্রথমবারের মতো রেশন কার্ড, আধার, পেনশন সহ প্রয়োজনীয় নথি প্রদান করা হয়েছে। জীবিকাভিত্তিক প্রকল্পের মাধ্যমে ৪,৩৯৪টি পরিবারকে সহায়তা দেওয়া হয়েছে। পাশাপাশি ৬৪,০০৬টি ঝুঁকিপূর্ণ পরিবারকে চিহ্নিত করে তাদের জন্য পৃথক মাইক্রো-প্ল্যান তৈরি করা হয়েছে।

স্থানীয় স্বশাসনমন্ত্রী এম বি রাজেশ জানান, ‘এক্সট্রিম পভার্টি ইরাডিকেশন প্রোগ্রাম’ (ইপিইপি) স্বচ্ছ ও অংশগ্রহণমূলক প্রক্রিয়ার মাধ্যমে বাস্তবায়িত হয়েছে। তাঁর কথায়, “এই সাফল্য কোনও একদিনের কাজ নয়। এটি দীর্ঘদিনের ধারাবাহিক প্রচেষ্টার ফল, যা রাজনৈতিক সীমানা অতিক্রম করে স্থানীয় প্রশাসনের সম্মিলিত উদ্যোগে সম্ভব হয়েছে।”

বিরোধীদের সমালোচনার জবাবে মুখ্যমন্ত্রী পিনারাই বিজয়ন বলেন, “যারা আমাদের উদ্যোগকে ভাঁওতা বলছে, তারা আসলে নিজেদের চরিত্রের প্রতিফলন ঘটাচ্ছে। আমরা যা বলি, তা বাস্তবায়ন করি — সেটাই আমাদের জবাব।”

Post a Comment

নবীনতর পূর্বতন