এশিয়ায় ‘মেজর পাওয়ার’ হিসেবে ভারতের উত্থান লোই ইনস্টিটিউটের সূচকে তৃতীয় স্থানে ভারত

লোই ইনস্টিটিউটের রিপোর্ট বলছে, ভারতের এই উত্থানের প্রধান কারণ সামরিক ও অর্থনৈতিক দুই ক্ষেত্রেই উল্লেখযোগ্য অগ্রগতি।

এশিয়ায় ‘মেজর পাওয়ার’ হিসেবে ভারতের উত্থান লোই ইনস্টিটিউটের সূচকে তৃতীয় স্থানে ভারত

নয়াদিল্লি: এশিয়ায় শক্তির ভারসাম্যে বড় পরিবর্তনের ইঙ্গিত দিল অস্ট্রেলিয়া-ভিত্তিক থিঙ্ক ট্যাঙ্ক লোই ইনস্টিটিউটের সাম্প্রতিক এশিয়া পাওয়ার ইনডেক্স। এ বছরের তালিকায় ভারত ‘মেজর পাওয়ার’ হিসেবে স্বীকৃতি পেয়ে সরাসরি তৃতীয় স্থানে উঠে এসেছে। গত বছর যেখানে ভারত ছিল ‘মিডল পাওয়ার’ ক্যাটেগরিতে, সেখানে এবার সামগ্রিক স্কোর বেড়ে ৪০-এ পৌঁছে জাপান ও রাশিয়াকে পিছনে ফেলল। শীর্ষ দুই স্থান ধরে রেখেছে যুক্তরাষ্ট্র ও চিন।

২০২৪ সালে ভারতের স্কোর ছিল ৩৮.১। কিন্তু ২০২৫ সালের সূচকে তা বেড়ে দাঁড়িয়েছে ৪০-এ। এতে জাপান (৩৮.৮) চতুর্থ এবং রাশিয়া (৩২.১) পঞ্চম স্থানে নেমে গেছে। যদিও চিনের সঙ্গে ভারতের ব্যবধান এখনও বড়—চিনের স্কোর ৭৩.৭, আর যুক্তরাষ্ট্র ৮০.৫ স্কোর নিয়ে শীর্ষে।

লোই ইনস্টিটিউটের রিপোর্ট বলছে, ভারতের এই উত্থানের প্রধান কারণ সামরিক ও অর্থনৈতিক দুই ক্ষেত্রেই উল্লেখযোগ্য অগ্রগতি। বিশেষ করে ২০২৫ সালের মে মাসে চালু হওয়া ‘অপারেশন সিঁদুর’ সামরিক সক্ষমতা ও বাস্তব লড়াইয়ের অভিজ্ঞতার ক্ষেত্রে আন্তর্জাতিক মহলে ভারতের ভাবমূর্তি বাড়িয়েছে। বিদেশি বিনিয়োগও বড় ভূমিকা রেখেছে; অর্থনৈতিক সম্পর্ক সূচকে ভারত নবম স্থানে উঠে এসেছে। গত এক দশকের হিসেব অনুযায়ী, আমেরিকার পর বিশ্বের দ্বিতীয় বৃহত্তম বিদেশি বিনিয়োগের গন্তব্য হিসেবে এখন ভারত চিনকে ছাড়িয়েছে।

রিপোর্টে ভারতের ভূরাজনৈতিক বিস্তার, কূটনৈতিক প্রভাব, আন্তর্জাতিক সংযোগ এবং প্রযুক্তিগত সক্ষমতার উন্নতির কথাও উল্লেখ করা হয়েছে। তবে দুর্বলতার দিকও আছে। প্রতিরক্ষা নেটওয়ার্ক সূচকে ভারতের অবস্থান দুই ধাপ নেমে ১১তম স্থানে এসেছে; ফিলিপাইন ও থাইল্যান্ড এই ক্ষেত্রে ভারতকে পেছনে ফেলেছে। থিঙ্ক ট্যাঙ্কের সতর্কবার্তা—সামরিক ও অর্থনৈতিক শক্তি বাড়লেও প্রতিরক্ষা অংশীদারিত্বের ঘাটতি ভারতের সামগ্রিক প্রভাব বিস্তারে একটি বড় চ্যালেঞ্জ হয়ে রয়ে যাচ্ছে।

সামগ্রিকভাবে লোই ইনস্টিটিউট বলছে, সাম্প্রতিক সামরিক অভিযান, স্থিতিশীল অর্থনৈতিক গতিশীলতা এবং আঞ্চলিক কূটনীতিতে সক্রিয় ভূমিকা ভারতের অবস্থানকে এশিয়ার কৌশলগত পরিমণ্ডলে নতুন উচ্চতায় পৌঁছে দিয়েছে। ইন্দো-প্যাসিফিক অঞ্চলে প্রভাব বিস্তারের সক্ষমতাই এবার ভারতের ‘মেজর পাওয়ার’-এ উন্নীত হওয়ার মূল ভিত্তি।

Post a Comment

নবীনতর পূর্বতন