এসআইআরের অংশ হিসেবে ৪ নভেম্বর থেকে ৪ ডিসেম্বর পর্যন্ত বাড়ি বাড়ি গিয়ে ফর্ম বিলি ও ভোটার তালিকা যাচাইয়ের কাজ চলবে।
কলকাতা: এসআইআর কার্যকর হওয়ার পর থেকেই ভোটার তালিকার নিবিড় সংশোধন নিয়ে সর্বোচ্চ প্রস্তুতি শুরু করেছে রাজ্যের শাসকদল তৃণমূল কংগ্রেস। বৈধ ভোটারদের নাম যেন বাদ না যায়, সেই লক্ষ্যে শুক্রবার দলের সর্বস্তরের নেতা-কর্মীদের সঙ্গে ভারচুয়াল বৈঠকে একগুচ্ছ পদক্ষেপের কথা ঘোষণা করেন তৃণমূলের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়। তিনি জানান, আগামী ৪ নভেম্বর থেকে ৪ ডিসেম্বর পর্যন্ত রাজ্যজুড়ে সকাল ৯টা থেকে বিকেল ৫টা পর্যন্ত মোট ৬২০০ হেল্পডেস্ক চালু করবে তৃণমূল। SIR সংক্রান্ত জনতার সমস্যার সমাধানেই কাজ করবে এই হেল্পডেস্কগুলি।
এই সময় বিএলও-দের কার্যত ‘ছায়াসঙ্গী’ হওয়ার নির্দেশ দিয়েছেন অভিষেক। দলের সাংসদ, বিধায়ক, ব্লক সভাপতি, পঞ্চায়েত প্রধান-সহ প্রায় ১৫ হাজার নেতা এই বৈঠকে উপস্থিত ছিলেন। অভিষেক এসআইআরের কাজকর্ম নিয়ে তাঁদের বিস্তারিত ধারণা দেন। জানা গিয়েছে, ২৮ অক্টোবর থেকে শুরু হওয়া বিশেষ নিবিড় সংশোধন বা এসআইআরের অংশ হিসেবে ৪ নভেম্বর থেকে ৪ ডিসেম্বর পর্যন্ত বাড়ি বাড়ি গিয়ে ফর্ম বিলি ও ভোটার তালিকা যাচাইয়ের কাজ চলবে। তৃণমূলের হেল্পডেস্ক থাকবে গ্রাম, পঞ্চায়েত ও পুরসভা এলাকায়, যেখানে ল্যাপটপ ও ইন্টারনেট সংযোগ থাকবে। ভোটার তালিকা সংক্রান্ত সমস্যা বা অভিযোগের সমাধান করা হবে সেখানেই। পাশাপাশি ‘দিদির দূত’ অ্যাপের মাধ্যমেও অভিযোগ জানানো যাবে। দিনের কাজের বিস্তারিত রিপোর্ট পাঠাতে হবে অভিষেকের ক্যামাক স্ট্রিটের দপ্তরে।
রাজ্যে মোট প্রায় ৯০ হাজার বুথে বিএলএ ১ ও বিএলএ ২-রা কাজ করবেন বিএলও-দের সহায়তায়। সূত্রের খবর, অভিষেকের নির্দেশ, “এক মিনিটের জন্যও যাতে বিএলও-রা চোখের আড়ালে না থাকেন।” তাঁর দাবি, বিজেপির উদ্দেশ্য বৈধ ভোটারদের নাম রাখা বা অবৈধ নাম বাদ দেওয়া নয়, বরং রাজনৈতিক এজেন্ডা বাস্তবায়ন। তাই বিএলও-দের উপর চাপ তৈরি করতে পারে বিজেপি, সেই কারণেই তাঁদের পাশে থাকার নির্দেশ তৃণমূল নেতার।
অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায় নিজেও এই কার্যক্রমে সরাসরি অংশ নেবেন বলে জানিয়েছেন। ক্যামাক স্ট্রিটের দপ্তরে জনতার অভিযোগ জানানোর জন্য একটি নম্বরও প্রকাশ করা হয়েছে—৮১৪২৬৮১৪২৬। সব মিলিয়ে, এসআইআরে কোনও বৈধ ভোটারের নাম যেন বাদ না পড়ে, তা নিশ্চিত করতে কার্যত একপ্রকার ‘দুর্গ’ গড়ে তুলছে তৃণমূল কংগ্রেস।
এদিকে, তৃণমূলের এই উদ্যোগকে কটাক্ষ করেছেন বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারী। তিনি সাংবাদিক বৈঠকে বলেন, “কী আর হবে ওসব ক্যাম্পে? বিএলও-দের হুমকি দেবে তৃণমূলের লোকজন।”

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন